উৎসবের মতো ম্লান হয়ে আসে রক্ত ফেনামুখ
দৃশ্যের অন্তরালে একা হয়ে থাকা ছায়া, তাকে ফেরাবে কে?
আদালত রায় দিলে ফাঁসি।
উজবুক সব লোকের ভিড়ে দেখতে আসা তোমার চোখ
কীভাবে তাকাবে আমার দিকে? আমি আসামি, পলাতক
জন্মভ্রষ্টে কেটে গেছে ভালোবাসাহীন, নির্মম, ব্যভিচারে।
বাড়তে থাকা জনসমাগম ঠেলে, কতদূর এগুবে তুমি?
ততক্ষণে আমার পানাহ হয়ে যাবে, দৃশ্যের ক্ষতিগ্রস্ত
বিজ্ঞাপনের মতো। ঘড়ির কাটা থামাতে পারবে?
সে তো প্রেমকে দেবে না আগ্রাসন,খুনির জীবন নিয়ে
এতো এতো নির্দয় লোকের করুণায় আর কতকাল প্রকাশ্যে রবো?
দেখো, অশ্রুর বেয়নেট কী ঘাতক! তোমাকে হত্যা করে চলেছে
আমার আগে, যেন তুমি আগেই ফুরিয়ে যাবে
ক্ষান্ত হও। খোদা তোমার সাথে আছেন।
মৃত্যুদূত এসে গেছে। তিনি কখনোই খালি হাতে যাবেন না।
ঈশ্বর এবং তুমি
তুমি ঈশ্বরের পাশা খেলা
মেতে ওঠো জুয়ার মঞ্চে
অগণিত হাত তোমার দিকে
তুমি কার দিকে? ভেবে না পাও
এতো ভিড়ের মাঝে,তুমি কীভাবে লুকাও?
তুমি ঈশ্বরের বিক্রিত ফণা
একাই করেছো খুন, সহস্রাধিক
উন্মত্ত জোয়ান, তবুও জানো না........তুমি
কার নামে লিখে দেবে রাতের বিরানভূমি।
একদিকে জুয়ায় হেরে অন্যদিকে না পেয়ে তোমাকে
এসব অগণিত মেন্টাল কি জানি কার কথা কাকে
দরোজায় টুকা দিয়ে, স্ত্রীর কথা বলে ফেলে মাকে।
তুমি ঈশ্বরের অভিশাপ
তবুও জুয়ার আসরে তোমাকে চাই
অতি নিকটে থাকো, ঈশ্বরের মতো
তোমাকে পাওয়ার সহজ কৌশল জানা নাই।
তোমাকে ছেড়ে যাবো বলে রেললাইনে মাথা ভাগ হয়ে আছে
তোমাকে ছেড়ে যাবো বলে রেললাইনে মস্তক ভাগ হয়ে আছে
জানি এ শরীর কারো ঠিকানায় যাবে না
অজ্ঞাতনামা প্রেমিকের লাশ
ময়নাতদন্তেও যাবে না, যদি তোমার চিহ্ন থেকে যায় বুকে
সমগ্র শহর জেনে যাবে তুমি খুনি। অথচ দেখো, কী গভীর ঘুমে
থেকে থেকে কাঁপছে হৃৎপিণ্ড। একবার যদি সে মুখ খোলে
তোমার দেয়া আঘাতে বিচ্ছিন্ন মস্তক ছড়িয়ে আছে মর্গে
ভয় পেয়ো না, সে কিছুই বলবে না
তোমাকে মুক্তির মুকুট পরাবে বলে
রেললাইনে ঝুঁকে গেছে পৃথিবী।
আমি বাবার মতো একজন পুরুষ চেয়েছিলাম
আমি বাবার মতো একজন পুরুষ চেয়েছিলাম। যে কি না শুধু মাকে খুশি করবার জন্য আমার জন্ম দিয়েছেন। বাবা কখনো চাইতেন না, তার সন্তান হোক। কিন্তু মা ছিল তার উল্টো। মায়ের এই একটা শখ পূরণ করতে বাবার গেল জনম, মায়ের গেল জনম। আমার বিয়ে হলো এক খানকির পোলার সাথে, সারাক্ষণ শুধু সন্তান সন্তান করে।আর যখন আমার বার্ধক্য জীবন চলে আসে,তখনও তাকে সন্তান দিতে পারিনি। তারে বললাম, বুইড়া তো হয়ে গেছি, আর সন্তান হওয়ার চান্স নাই।তবুও সে আশায় বাঁচে।
আমি একজন বাবার মতো সঙ্গী চেয়েছিলাম, অথচ পেলাম মায়ের মতো।
আফসোস হয়,কবিতায় আমি পরকীয়া করতে পারি না
কবিতায়ও আমি প্রতিবেশি আসমা বেগমের মতো পরকীয়া করতে পারি না বলে আফসোস হয় ।স্বামী অফিসে যাওয়ার পর আসমা বেগম কীভাবে রোজ কোমরের ভাঁজ খুলে ব্যালকনিতে দাঁড়ায়। আর ওদিকে শিকারি আমজাদ পোদ্দার খিড়কির ফাঁকে তাকিয়ে থাকে, কখন একটু ইশারা দেবে আসমা বেগম। ইশারা পেলেই বিদ্যুৎ গতিতে চলে আসবে আসমার কাছে। যেনো পুলসিরাত পার হয়ে প্রবেশ করবে স্বর্গে। প্রবেশ করে প্রথমে হাত,তারপর ঘাড়ের চুল সরিয়ে চুমু, তারপর কোমরে হাত, তারপর...................তারপর…
ততোক্ষণে একটা ক্ষুধার্ত বিড়াল ইঁদুর ধরে খেয়ে ফেললো। ওটুকু সময়ে দুটো জীবন অতিবাহিত হলো দুভাবে।একদিকে আসমার বিশ্বাসঘাতকতা অপরদিকে ইঁদুরের জীবন।আমজাদ পোদ্দার যেতে উদ্যত হলে, আসমা বেগম পেছন থেকে শার্টের কলার টেনে বলবে, উফফ!! আরেকটু থেকে গেলেও পারতে।
আমারও খুব আরেকটু থাকতে ইচ্ছে হয়।আমারও ইচ্ছে করে একটু পরকীয়া করি।কিন্তু আমি তো শালার ইঁদুরের জীবন নিয়ে বেঁচে আছি।চাইলেও আসমা বেগমের মতো পরকীয়া করতে পারি না।পারি না এমনকি কবিতায়ও।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন